মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাত দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
আজ রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতীয় টাস্কফোর্সের (এনটিএফ) এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
জাতিসংঘ ও সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রিত রয়েছে। গত দেড় বছরে রাখাইনের সেনা ও আরাকান আর্মির সংঘাতের কারণে আরও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এনটিএফ বৈঠকে জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা জানান, অর্থাভাবের কারণে শরণার্থী ক্যাম্প পরিচালনা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জাতিসংঘ খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্য অনুযায়ী নভেম্বরের পর খাদ্য সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এখনো নিশ্চিত হয়নি। এছাড়া সেপ্টেম্বরের পর থেকে ক্যাম্পবাসীদের জন্য তরলীকৃত গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে জ্বালানির ঘাটতি পূরণে বনভূমি ধ্বংসের ঝুঁকি বাড়বে।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন দেশ যে আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেয়, বাস্তবে তার অর্ধেকও মেলে না।
পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, রোহিঙ্গা সংকট যাতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্ব না হারায়, সে জন্য বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের সহযোগিতায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকের আগে বিদেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রধানদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব ক্যাম্পের জন্য প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।